ভারতে ওয়াকফ বিল নিয়ে উত্তাল মুর্শিদাবাদ, নিহত ৩

ভারতে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় শনিবারও উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলা। সহিংসতা থামাতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত ১১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য ওয়াল, এবিপি আনন্দ ও আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এখবর জানানো হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামশেরগঞ্জে বাড়িতেই বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। তারা হলেন হরগোবিন্দ দাস (৭৪) ও চন্দন দাস(৪০)। এছাড়া সুতির সাজুর মোড়ে গুলিতে আহত কিশোরের মৃত্যু হয়েছে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

পুলিশ জানায়, গণ্ডগোল চলার সময় শামসেরগঞ্জে হরগোবিন্দ দাসের বাড়িতে ঢুকে পড়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী। পরে ঘর থেকে বাবা-ছেলের রক্তাক্ত দেহ মেলে।

ভারতে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলা। শুক্রবারের পর শনিবারও সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সামশেরগঞ্জ। শুরু হয় সংঘর্ষ। অবস্থা সামাল দিতে বিএসএফ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ধুলিয়ান পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডে গুলিবিদ্ধ হয়েছে এক যুবক ও এক কিশোর। চিকিৎসার জন্য জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি।

আহতরা হলেন- হাসান সেখ ও গোলামউদ্দিন সেখ। তাদের বাড়ি সামশেরগঞ্জ থানার তারাবাগান এলাকায়। এই ঘটনায় বিএসএফের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ করেছেন আহতদের আত্মীয়রা।

ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার বিকেল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ। জঙ্গিপুরের ঘটনার পর ১৬৩ ধারা অমান্য করে প্রতিবাদে নামেন স্থানীয়রা। তারা ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের বাধায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ান ডাকবাংলো ও রতনপুর এলাকায় পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ট্রাফিক পুলিশের অফিস। জ্বালানো হয় সরকারি-বেসরকারি বাস। বাদ যায়নি অ্যাম্বুল্যান্সও। অভিযোগ, হামলা চালানো হয় স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম, সাংসদ খলিরুল রহমানের বাড়িতেও। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি চলে। আক্রান্ত হন ফরাক্কার এসডিপিও। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় বিএসএফ। শনিবার সকাল থেকে ধুলিয়ান এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএসএফও নজরদারি চালাচ্ছে।

রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রাজিব কুমার শনিবার (১২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের জানান, মুর্শিদাবাদের ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কোনো জাতি ধর্ম দেখবে না। বেশ কিছু জায়গায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম জানান, সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তিনি বলেন, ‘‘সুজার মোড়ে (মুর্শিদাবাদ) প্রচণ্ড সংযত থেকে পুলিশ পদক্ষেপ করেছিল। কিন্তু উত্তেজিত জনতাকে বাগে আনা যায়নি। প্রায় তিন ঘণ্টা পুলিশের উপর হামলা, দোকানপাট ভাঙচুর, সরকারি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করেন তাঁরা। তখন বাধ্য হয়ে পুলিশকে গুলি চালাতে হয়। চার রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। তাতে দু’জন আহত হন। জানান, এ পর্যন্ত ১৫ জন আহত হয়েছেন। কয়েক জন গুরুতর আহত হয়েছেন।’’

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন ...
fb-share-icon





সম্পর্কিত সংবাদ

  • যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি থাকা বিদেশিদের নিবন্ধন করার নির্দেশ
  • সৌদিতে আজ থেকে ওমরাহ করতে যেতে পারবেন না কেউ
  • ট্রাম্প-মাস্কবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল আমেরিকা
  • ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করল সৌদি
  • যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে চায় ইন্দোনেশিয়া
  • এশীয় ক্রেতাদের জন্য তেলে মূল্যছাড়ের ঘোষণা সৌদির
  • ফিলিস্তিনি সংকটের সমাধান ছাড়া শান্তি অসম্ভব: সিসি
  • Copy link
    URL has been copied successfully!