আইপিএলে আসছে বড় পরিবর্তন, টুর্নামেন্ট হতে পারে ৯৪ ম্যাচের

আইপিএলের আসর আরও বড় করার চিন্তাভাবনা করছে বিসিসিআই। ২০২৮ সাল থেকে আইপিএলকে ৯৪ ম্যাচের টুর্নামেন্টে পরিণত করার ব্যাপারে সক্রিয় আলোচনা চলছে। তবে আপাতত নতুন কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেই।

২০২২ সালে গুজরাট টাইটান্স ও লখনউ সুপারজায়ান্টস যুক্ত হওয়ার পর আইপিএল ৭৪ ম্যাচের ফরম্যাটে উন্নীত হয়। তখন থেকেই ২০২৫ সালের জন্য ৮৪ ম্যাচে বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে টুর্নামেন্টের নির্ধারিত সময়ের চাপ এবং ব্রডকাস্টারদের অতিরিক্ত ডাবল হেডার নিয়ে আপত্তির কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। যদিও মাঝারি মেয়াদে টুর্নামেন্ট আরও বড় করার পরিকল্পনা এখনও টেবিলে রয়েছে।

বর্তমানে আইপিএলের সময়সূচি আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচিতে (এফটিপি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা আগামী দুই বছর মার্চের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে। তবে আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল জানিয়েছেন, ২০২৮ সাল থেকে শুরু হওয়া পরবর্তী মিডিয়া রাইটস চক্রের জন্য পুরোপুরি হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ৯৪ ম্যাচের আইপিএল আয়োজনের ব্যাপারে বিসিসিআই ভাবছে।

ধুমাল বলেছেন, “নিশ্চয়ই এটা একটা বড় সুযোগ হতে পারে। আমরা আইসিসি ও বিসিসিআই’র মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা করছি। এখন যেভাবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়ছে, তাতে ভবিষ্যতে আমাদের আরও গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি ভাবতে হবে, যাতে খেলাটির স্টেকহোল্ডারদের জন্য সর্বোচ্চ মূল্য সৃষ্টি করা যায়।”

তিনি আরও বলেন, “আদর্শভাবে আমরা চাইব, ম্যাচ সংখ্যা বাড়িয়ে ৮৪ বা ৯৪-তে নিয়ে যেতে। যাতে প্রতিটি দল হোম ও অ্যাওয়ে ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন হবে ৯৪টি ম্যাচ। তবে এখনকার এফটিপি এবং দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ও আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোর ব্যস্ত সূচি মাথায় রেখে তা তাৎক্ষণিক সম্ভব নয়। তবে ভবিষ্যতে সময়ের সাথে সাথে যদি পরিবেশ অনুকূলে আসে, তখন এই বিকল্প বিবেচনা করব।”

ধুমাল বলেন, “টেস্ট সিরিজ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং আইপিএল- সব মিলিয়ে এত ক্রিকেট হচ্ছে যে, এখনই ৭৪ থেকে ৮৪ ম্যাচে যাওয়া যৌক্তিক হবে না। তবে সময়-সুযোগ বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।”

২০২৫ সালের এফটিপি নিয়ে বোর্ডগুলোর আলোচনায় আইপিএলের সময়সীমা নিয়েও আলোচনা হবে। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তারা ইএসপিএনক্রিকইনফোকে জানিয়েছেন, তারা ৯৪ ম্যাচের আইপিএল দেখতে চান। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে ব্রডকাস্টারদের আগ্রহের ওপর।

কারণ, সাধারণত আইপিএলের মাঝামাঝি সময়ে টিভি ও স্ট্রিমিং দর্শকসংখ্যা কিছুটা কমে আসে। ব্রডকাস্টাররা মনে করেন, দর্শকদের ক্লান্তিই এর বড় কারণ। ২০২৫ সালের আইপিএল ৯ সপ্তাহ ধরে চলবে, যেখানে ১২টি ডাবল হেডার থাকবে। আর পূর্ণাঙ্গ হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাটে গেলে আরও দুই সপ্তাহ বাড়তি সময় লাগবে আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারে।

অবশ্য, ফ্র্যাঞ্চাইজি সংখ্যা বাড়ানোর কোনো তাত্ক্ষণিক পরিকল্পনা বিসিসিআই’র নেই। ধুমাল বলেন, “এখন ১০টি দলই যথেষ্ট। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো টুর্নামেন্টের মান এবং খেলার গুণগতমান ধরে রাখা। তাই এখনই নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি যুক্ত করার কোনো সুযোগ দেখছি না। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে তখন বিবেচনা করা হবে।”

ধুমাল আইপিএল ২০২৫ মৌসুমকে সফল বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, “এবারের আইপিএলে দারুণ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ছিল এবং বেশ কিছু তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটার উঠে এসেছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, এবারের আসরে যদি নতুন কোনো দল প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়, তাহলে সেটা আইপিএলের জন্য দারুণ ব্যাপার হবে। এখন পর্যন্ত দিল্লি ক্যাপিটালস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু, পাঞ্জাব কিংস এবং লখনউ সুপারজায়ান্টস প্লে-অফের দৌড়ে আছে, যাদের মধ্যে কেউই এখনো শিরোপা জিততে পারেনি।

ধুমাল বলেন, “প্রতি বছর আইপিএল আরও বড় হচ্ছে। আমরা ভীষণ খুশি যে, ভক্তরা টুর্নামেন্টটাকে এত ভালোবাসছে। সম্প্রচার ও স্টেডিয়ামে দর্শকসংখ্যা অভূতপূর্ব। এবারের ১৮তম আসরকেও আমরা স্মরণীয় করে রাখতে চাই। গত ১৭ বছরের মতো আগামীতেও আইপিএল এই ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।”

তিনি আরও যোগ করেন, “ব্যক্তিগতভাবে চাই, এ বছর এমন একটি দল চ্যাম্পিয়ন হোক যারা আগে কখনো শিরোপা জেতেনি। দিল্লি, পাঞ্জাব, আরসিবি এদের কেউ যদি ফাইনালে গিয়ে ট্রফি জেতে, তাহলে আইপিএলের জন্য দারুণ এক গল্প তৈরি হবে।”

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন ...
fb-share-icon





সম্পর্কিত সংবাদ

  • মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি সাঁতারু রাফির স্বর্ণজয়
  • প্রতিবাদ করায় এবার প্রাণনাশের হুমকি গম্ভীরকে
  • চট্টগ্রাম টেস্টের দল ঘোষণা বাংলাদেশের, ডাক পেলেন বিজয়
  • লড়াই করেও হারল বাংলাদেশ
  • জর্ডানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ
  • বিশ্বকাপের বাছাইয়ে হ্যাটট্রিক জয় বাংলাদেশের
  • আইসিসির মার্চের সেরা আইয়ার
  • Copy link
    URL has been copied successfully!