সফলতার মূল চাবিকাঠি

ইসলামের দৃষ্টিতে মুত্তাকি বা যাদের অন্তরে সর্বদা আল্লাহভীতি কাজ করে তারাই প্রকৃত অর্থে সফল। দুনিয়া-আখেরাতে তাদের পুরস্কার অসীম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে সফলতা। (সুরা নাবা: ৩১) পরকালে মুত্তাকিদের বড় পুরস্কার দিয়ে ধন্য করা হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে মহা পুরস্কার দান করেন। (সুরা তালাক: ৫)

আরও ইরশাদ হয়েছে, মুত্তাকিদের যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্ত এরূপ, তার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত। তার খাদ্যসামগ্রী ও তার ছায়া সার্বক্ষণিক। যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে, এটি তাদের শুভ পরিণাম আর কাফিরদের পরিণাম আগুন। (সুরা রাদ: ৩৫)

দুনিয়াতে মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অনেক নেয়ামত। তাদেরকে তিনি বিপদাপদ থেকে বের হওয়ার রাস্তা আল্লাহ খুলে দেন এবং অকল্পনীয় রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে (বিপদাপদ থেকে) নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন।’ (সুরা তালাক: ২-৩)

আরও পড়ুন: রিজিক বণ্টন নিয়ে কোরআন-হাদিসে যা আছে

কাজ-কর্মসহ যাবতীয় বিষয়াদি মুত্তাকিদের জন্য আল্লাহ সহজ করে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।’ (সুরা তালাক: ৪)

সবরকম কাজে মুত্তাকিদের জন্য বরকতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি সেই জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেজগারি অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানি ও পার্থিব নেয়ামতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের কারণে।’ (সুরা আরাফ: ৯৬)

মুত্তাকিদের সবচেয়ে বড় পুরস্কার হলো- আল্লাহ তাদের সঙ্গী হয়ে যান। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সাথে আছেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎকর্ম করে।’ (সুরা নাহল: ১২৮)

এছাড়াও আল্লাহ তাদের দ্বীনি জ্ঞান দান করবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহকে ভয় করো তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন।’ (সুরা বাকারা: ২৮২)

যারা আল্লাহকে ভয় করে চলে, তাদেরকে আল্লাহ কাফেরদের ষড়যন্ত্র থেকেও হেফাজত করবেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর ঘোষণা, ‘যদি তোমরা ধৈর্যধারণ করো এবং তাকওয়া অবলম্বন করো, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনো ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে, সবকিছুই আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে।’ (সুরা ইমরান: ১২০)

মুত্তাকিদের পরকালীন ফায়দা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশি থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।’ (সুরা নাজিয়াত: ৪০-৪১) সুরা রহমানে এসেছে, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দুটি উদ্যান অর্থাৎ আল্লাহ তাকে দুটি জান্নাত দিবেন। (সুরা আর-রহমান: ৪৬)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মুত্তাকি তথা তাকওয়াবান বা আল্লাহভীরু হওয়ার তাওফিক দিন। আমিন।

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন ...
fb-share-icon


« (পূর্ববর্তী সংবাদ)
(পরবর্তী সংবাদ) »



Copy link
URL has been copied successfully!