খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন ৭ জানুয়ারি

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাতজন চিকিৎসকসহ ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে চিকিৎসার জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়া ৭ জানুয়ারি রাত ১১টায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
লন্ডন এবং যুক্তরাষ্ট্রে তিনি চিকিৎসা নেবেন। বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, কর্মকর্তা, পরিবারের সদস্য এবং অন্য নেতারা তার সফরসঙ্গী হিসেবে যাচ্ছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে দীর্ঘদিনের ব্যাপক আলোচনার পর অবশেষে সফরের চূড়ান্ত সূচি তৈরি হয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ডা. মো. এনামুল হক চৌধুরী, তাবিদ মোহাম্মদ আওয়াল, ফখরুদ্দীন মোহাম্মদ সিদ্দিক, মো. শাহাবুদ্দীন তালুকদার, নুরুদ্দীন আহমাদ, মো. জাকির ইকবাল, মোহাম্মদ আল মামুন, শরিফা করিম স্বর্ণা, চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এবিএমন আব্দুস সাত্তার, মো. মাসুদুর রহমান, এসএম পারভেজ, ফাতেমা বেগম এবং রুপা শিকদার। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার যাবতীয় প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসন তা সফরকে নির্বিঘ্ন করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সফরে বেগম খালেদা জিয়া ভিআইপি প্রটোকল পাবেন।
চেয়ারপারসনের একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, ম্যাডামের চিকিৎসা দুটি টিম হবে। প্রথম টিমে তার চিকিৎসা হবে লন্ডনে। এরপর তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তিনি জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে চিকিৎসা শেষে ম্যাডাম সৌদি আরবে ওমরা পালন শেষে দেশে ফিরবেন।
উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টসংশ্লিষ্ট এক ভুয়া মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন নিম্ন আদালত পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পরে উচ্চ আদালত ওই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে দেয়। যা ইতিহাসে নজিরবিহীন। পরবর্তী সময়ে সরকারের নির্বাহী আদেশে জেল থেকে বের করে গৃহবন্দি রাখা হয়। গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য বারবার আবেদন করার পরও তা নানা অজুহাতে আইনের মিথ্যা দোহাই দিয়ে প্রত্যাখ্যান করা হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা উৎখাত হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া সব অভিযোগ থেকে এখন মুক্ত। একজন মুক্ত মানুষ নিমিষেই তিনি এখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আসন্ন এই সফর চিকিৎসার জন্য হলেও রাজনৈতিক দিক থেকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিএনপি চেয়ারপারসনের বড় ছেলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৬ বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানকে নির্মম নির্যাতন করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে তৎকালীন মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকার।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে লন্ডনে মা-ছেলের সাক্ষাৎ হয়। দীর্ঘ আট বছর পর আবার মা-ছেলের সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবর্ধিত পরিস্থিতিতে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ও বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
সম্পর্কিত সংবাদ

শিগগির দলের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পাবে জামায়াত: আইনজীবী
নিবন্ধন নিয়ে হতাশ না হতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিমবিস্তারিত…

হাসিনা-জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি
রাজধানীর পূর্বাচলে প্লট অনিয়মের অভিযোগে দুদকের পৃথক দুই মামলায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, তার পুত্র সজীববিস্তারিত…