আজানের সময় মাথায় কাপড় দেওয়া কি জরুরি কিছু?

আমাদের দেশে নারীরা আজান শুরু হলে মাথায় কাপড় টেনে নেন। এটা আবহমান বাংলার ঐহিত্যে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে ইসলামে বিশেষ কোনো নির্দেশনা আছে কি না জানতে চান অনেকে। এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, মাথায় কাপড় দেওয়া আজানসংশ্লিষ্ট বিষয় নয়; বরং নারীদের মাথায় কাপড় সবসময় থাকা উচিত।

কেননা নারীদের উদ্দেশে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘তারা যেন তাদের জিলবাবের কিয়দংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়।’ (সুরা আহজাব: ৫৯)

তাফসিরবিদদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, ‘জিলবাব’ এমন কাপড়কে বলা হয়, যার মাধ্যমে নারীরা নিজেদের শরীর ঢেকে রাখেন। আর ‘জিলবাব’ অর্থ বড় চাদর, যা মাথাসহ মুখমণ্ডল ও পূর্ণ দেহ আবৃত করে ফেলে। (তাফসিরে কুরতুবি: ১৪/২৪৩)

মাহরাম পুরুষের জন্য মহিলার মাথা, চেহারা, হাত, গলদেশ ও হাঁটুর নিচের অংশ সতর নয়। তবে তাদের সামনেও যতটুকু সম্ভব আবৃত থাকাই উত্তম। বিশিষ্ট তাবেয়ি হাসান বসরি বলেছেন, ‘নিজ ভাইয়ের সামনেও নারীর ওড়না ছাড়া থাকা উচিত নয়।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৯/৩৭৩)

আমাদের নারীরা আজানের সময় যেভাবে মাথা ঢেকে নেন, এটা মূলত আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। যদি কোনো নারীর বাসা-বাড়িতে অসতর্কাবস্থায় মাথায় কাপড় না থাকে, তাহলে আজানের সময় সে যদি সতর্ক হয় এবং মাথায় কাপড় টেনে নেয়, তাহলে এটা ঈমান ও আল্লাহভীতির পরিচায়ক।

কেননা আজান আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও মহত্ত্বসংবলিত কিছু বাক্যের সমষ্টি, যা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ‘শিআর’ তথা প্রতীক। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘কেউ আল্লাহর প্রতীকে সম্মান প্রদর্শন করলে সেটা তো তার হৃদয়ের খোদাভীতিপ্রসূত।’ (সুরা হজ: ৩২)

অতএব, আজানের সময় মাথায় কাপড় টানার সরাসরি নির্দেশনা না থাকলেও আজানের সম্মানার্থে কেউ মাথায় কাপড় টেনে নিলে সেটা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ।

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন ...
fb-share-icon





Copy link
URL has been copied successfully!