রোজা অবস্থায় মুখ ভরে বমি হলে করণীয় কী

রোজায় বমি নিয়ে আমাদের সমাজে ভুল কথা প্রচলিত রয়েছে। কিছু মানুষের ধারণা, রোজা অবস্থায় মুখ ভরে বমি হলে রোজা ভেঙে যাবে এবং তার কাজা করতে হবে। তাদের এ ধারণা সঠিক নয়। অনিচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি হলে রোজা ভাঙবে না, কাজাও আদায় করতে হবে না। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা আদায় করতে হবে।

ইচ্ছাকৃত বমি করার মানে হলো- মুখে আঙ্গুল দিয়ে বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে ইচ্ছাকৃত মুখভরে বমি করা; এতে রোজা ভেঙে যাবে। (ফতোয়া হিন্দিয়া: খণ্ড-০১, পৃষ্ঠা-২০৪; রদ্দুল মুখতার: খণ্ড-০২, পৃষ্ঠা-৪২১)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- مَنْ ذَرَعَهُ القَيْءُ، فَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءٌ، وَمَنْ اسْتَقَاءَ عَمْدًا فَلْيَقْضِ ‘যার অনিচ্ছাকৃত বমি হয়ে যায় তাকে কাজা আদায় করতে হবে না (অর্থাৎ তার রোজা ভাঙবে না)। আর যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বমি করে সে যেন কাজা আদায় করে (অর্থাৎ তার রোজা ভেঙে যাবে)। (জামে তিরমিজি: ৭২০; সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৬৭৬; মুসতাদরাক হাকেম: ১৫৫৭)

সুতরাং অনিচ্ছাকৃত বমি হলে চিন্তার কিছু নেই; রোজা রেখে দেবেন। তবে, বমির পর অতি দুর্বলতার কারণে রোজা রাখতে অপারগ হয়ে গেলে রোজা ভঙ্গও করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র কাজা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। কাফফারা শুধুমাত্র ওসব ক্ষেত্রেই ওয়াজিব হয়ে থাকে, যেসব ক্ষেত্রে শরয়ি ওজর ছাড়াই রোজা ভঙ্গ করা হয়ে থাকে।

আসলে ইসলামের প্রত্যেকটি বিধান সহজ ও সুন্দর। ইসলাম কাউকে অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়নি। শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাভেদে রোজা না রাখারও অনুমোদন রয়েছে। যেমন গর্ভবর্তী, দুগ্ধদানকারী মা, অসুস্থ, বার্ধক্যের কারণে দূর্বল, মুসাফির ইত্যাদি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের বিধি-বিধান যথাযথ পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি ফেসবুকে শেয়ার করুন ...
fb-share-icon





Copy link
URL has been copied successfully!